ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing) কি এবং কেনো আমাদেরকে এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন? আপনার মনে যদি এরকম প্রশ্ন নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে এসে থাকেন, তাহলে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবান। এই অনুচ্ছেদটি মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আপনি এই টপিকের সকল বিষয় আলোচনা করা হবে।
আজকাল বহু মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing) করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে। ইন্টারনেটের আশির্বাদের ফলে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে মার্কেটিং করা সম্ভব হচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে থাকলে আপনি শুধু নিজের কাজই করতে পারবেন না, আপনি চাইলে অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing) কি?
- ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing) কি?
- ডিজিটাল মার্কেটিং vs অ্যানালগ মার্কেটিং
- কখন ডিজিটাল মার্কেটিং করা প্রয়োজন?
- ডিজিটাল মার্কেটিং – Digital Marketing এর বিভিন্ন প্রকার
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন – Search Engine Optimization
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং – Social Media Marketing
- কন্টেন্ট মার্কেটিং – Content Marketing বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে
- ইমেইল মার্কেটিং – Email Marketing
- ভিডিও মার্কেটিং – Video Marketing
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং – Influencer Marketing
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং – Affiliate Marketing
- শেষকথা
মার্কেটিং বিষয়টি কেনাবেচার সাথে সম্পর্কিত। কোনো জিনিস বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। আপনি যখন বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যালেন, সার্চ ইঞ্জিন, স্যোশাল মিডিয়া, ইমেইল, মোবাইল অ্যাপস, ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোনো পণ্য বা প্রোডাক্ট সেল করবেন।
বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে এখন ঘরে বসেই বিভিন্ন দেশের খবর ও সেই সাথে বিভিন্ন ধরণের স্যোশাল মিডিয়ায় নিজের প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরম বিভিন্ন প্রোডাক্টের প্রচারণা চালায়।

আপনি যদি কোনো জিনিস অনলাইনে সার্চ করে থাকেন অথবা কোনো বিষয় সম্পর্কে লেখালেখি করে থাকেন, কিছুক্ষণ পর আপনি সেই জিনিসের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন। স্যোশাল মিডিয়া আপনার ডাটাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটারসকে তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে সহায়তা করছে।
পৃথিবীতে যতগুলো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করছে। এখনকার দিনে বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া তাদের ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করে ব্যবসা করে থাকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং vs অ্যানালগ মার্কেটিং
একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটারস হতে হলে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকটি বিষয়ের উপর দক্ষ হতে হবে। তা না হলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফল হতে পারবেন না। বর্তমানে ঘরে বসেই বিভিন্ন প্রোডাক্টের ব্যাপারে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু, সুদূর অতীতে এই বিষয়গুলো সহজ ছিলোনা। কেননা, অতীতে কোনো পণ্য বা প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে হলে বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়াতে হতো।
বর্তমানে ইন্টারনেটের আশির্বাদের ফলে যেকোনো ডিজিটাল মার্কেটারস ঘরে বসেই যেকোনো পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারতো। সার্চ ইঞ্জিন ও বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া আপনার জন্য এই কাজটি সহজেই করে দিবে। আপনি যে পণ্য নিয়ে কাজ করবেন, সে প্রোডাক্ট নিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করলে এবং বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে পৌছে দিতে পারবেন।

অতীতে অ্যানালগ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক কঠিন ছিলো। কোথায় কোন প্রোডাক্ট বা পণ্যের চাহিদা বেশি এবং কোথায় কোন পণ্যের চাহিদা কম এসকল বিষয় সম্পর্কে জানা এতটা সহজ ছিলোনা। যদি কেউ এসকল বিষয় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলে তাকে বাজারে বাজারে স্ব-শরীরে গিয়ে বাজার সম্পর্কে জানতে হতো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিষয়টি হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো পণ্য সম্বন্ধে মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের ফলে।
পূর্বে যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনপ্রতিনিধি তাদের প্রচারণা চালিয়েছেন, কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌছে যাচ্ছে। আপনি ফেসবুকে লক্ষ্য রাখলে দেখবেন যে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে আপনার কাছে ভোট চাচ্ছে। এটি হয়ে থাকে মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্যই।
বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া ও সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে আপনি যত তাড়াতাড়ি মানুষের কাছে পৌছে যেতে পারবেন, অ্যানালগ মাধ্যমে আপনি ততগুলো মানুষের কাছে পৌছাতে আপনাকে অনেক কাটখড়ি পোড়াতে হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং কি অ্যানালগ মার্কেটিং বিষয়কে সরিয়ে দিয়েছে? এর উত্তর হচ্ছে – না। ডিজিটাল মার্কেটিং এসে অ্যানালগ মার্কেটিং এর ধারণাকে আরোও মজবুত করেছে। আগে যদি আপনি কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে চান, তাহলে বিভিন্ন বিলবোর্ড অথবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই পণ্যের বিজ্ঞাপন করতে হতো।
বর্তমানে বিভিন্ন উন্নত দেশে অ্যানালগ বিলবোর্ডকে প্রতিস্থাপন করে ডিজিটাল বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন প্রোডাক্টের প্রচারণা চালানো হয়। এই ডিজিটাল বিলবোর্ডকে কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়বস্তু | ডিজিটাল মার্কেটিং | অ্যানালগ মার্কেটিং |
---|---|---|
মাধ্যম | ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল | টেলিভিশন, রেডিও, প্রিন্ট |
টার্গেটিং | নির্দিষ্ট ও সু-সংঘটিত গ্রাহক | সাধারণ প্রেক্ষক |
মাপদণ্ড | ক্লিক, ভিজিট, কনভার্সন রেট | দর্শক সংখ্যা, TRP |
প্রতিক্রিয়া | প্রায় তাত্ক্ষণিক | সময় নিতে পারে |
কাস্টমাইজেশন | গ্রাহকের অনুসারে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন | একটি সাধারণ বার্তা সবার জন্য |
রেঞ্জ | বিশ্বব্যাপী | স্থানীয় বা জাতীয় সীমা পর্যন্ত |
খরচ | অনেক সময় কম খরচে বেশি আসর | সাধারণত বিশেষ মাধ্যমে বেশি খরচ |
কখন ডিজিটাল মার্কেটিং করা প্রয়োজন?
ডিজিটাল মার্কেটিং কখন করা উচিত এই প্রশ্নের উত্তর খুব সোজা। কেননা, আপনাকে কোন সময় কোন পণ্যের বিজ্ঞাপন করতে হবে এটা নির্ভর করে আপনি কি পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন।
আপনি যদি শীতের পণ্য বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপণ দিতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে শীতের মৌসুমে বিজ্ঞাপন চালাতে হবে। আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে মার্কেটিং করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে বয়সের দিকে বিবেচনা করে বিজ্ঞাপন চালু করতে হবে।

তাছাড়া আপনি যদি অঞ্চল ভিত্তিক মার্কেটিং এর বিষয়টি খুব মারাত্মকভাবে জড়িত থাকে। আপনি কখনোই এক অঞ্চলের সংস্কৃতির সাথে জড়িত কোনো পণ্য অন্য অঞ্চলে বিক্রি করতে পারবেন না। আর অন্য অঞ্চলের প্রচলিত পণ্য অন্য অঞ্চলে বিক্রি করতে পারবেন না।
তাছাড়া আপনি যদি মেয়েদের পণ্য ছেলেদের কাছে বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে কি সেই পণ্য বিক্রি হবে? অবশ্যই না। বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া বয়স, লিঙ্গ, পেশা, অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ করে দেয়।
তাই আপনাকে আপনার পণ্য অনুযায়ী আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কীসের, কাদের জন্য, কোন অঞ্চলের জন্য এবং কোন বয়সের মানুষের কাছে বিজ্ঞাপন দিয়ে মার্কেটিং করবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং – Digital Marketing এর বিভিন্ন প্রকার
ডিজিটাল মার্কেটিং বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। তবে যেসকল মার্কেটিং সবার কাছে জনপ্রিয় তাদের একটা লিস্ট নিচে উল্লেখ করা হলো-
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন – Search Engine Optimization
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং – Social Media Marketing
- কন্টেন্ট মার্কেটিং – Content Marketing
- ইমেইল মার্কেটিং – Email Marketing
- ভিডিও মার্কেটিং – Video Marketing
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং – Influencer Marketing
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং – Affiliate Marketing

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন – Search Engine Optimization
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের কিওয়ার্ডকে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেইজে রেংক করানোকে বোঝায়। আপনি এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে রেঙ্ক করাতে পারবেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) এর অপর নাম হচ্ছে এসইও (SEO)। এর মাধ্যমে আপনি যেকোনো কন্টেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করিয়ে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

একজন ভালো এসইও (SEO) মাস্টার হতে চাইলে আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ ভালো ভাবে জানতে হবে। যে কিওয়ার্ডের প্রতিযোগিতা কম সে কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ র্যাঙ্কিং এর একটি বড় ফেক্টর। আপনি যদি বেশি প্রতিযোগিতা সম্পন্ন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে সফলতা হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%। তবে আপনি যদি কম প্রতিযোগিতা সম্পন্ন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করেন, তাহলে সেই কিওয়ার্ড দিয়ে গুগলে র্যাঙ্কিং করা খুব সহজ হবে।
গুগল তথা বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে প্রথম পেইজে র্যাঙ্কিং করতে হলে আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সময় দিতে হবে। অনেক পেইড টুলস রয়েছে কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য, তবে সবচেয়ে ভালো টুলস হচ্ছে গুগল কিওয়ার্ড প্লানার যার মাধ্যমে আপনি ফ্রিতেই কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন।
একটা কথা বলে রাখা ভালো, বিভিন্ন পেইড টুলস গুগল কিওয়ার্ড প্লানার ব্যবহার করেই আপনাকে সকল ডাটা উপস্থাপন করছে। আমরা মনে করি একটা পেইড টুলস থেকে গুগলের ফ্রি টুলস ব্যবহার করে র্যাঙ্কিং সহজ হবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে গুগলের ফ্রি টুলস গুলোকে ব্যবহার করতে শিখতে হবে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ করার গুগলের আরোও একটি ফ্রি টুলস হচ্ছে গুগল ট্রেন্ড। গুগল ট্রেন্ড ব্যবহার করে বুঝতে পারবেন বর্তমানে কোন টপিক গুগলে খুব সার্চ হচ্ছে। আপনি এই টুলস ব্যবহার করে কাজ করলে সফলতা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং – Social Media Marketing
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing) হচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং ব্যবস্থাপনা। পৃথিবীতে বেশিরভাগ মানুষ আজ বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় সময় কাটায়। প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় Facebook, Instagram, Twitter এবং Tiktok এ নিজের স্টোরি শেয়ার করে থাকি।
কে কী করছে? কে কী খাচ্ছে? কে কি জিনিস কিনতে চাচ্ছে এবং কি কিনতে যাচ্ছে? এসকল বিষয় নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে থাকি। এসব তথ্যের উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল মার্কেটারসদেরকে মার্কেটিং করার সুযোগ করে দেয়।

আপনি যখন স্যোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন, তখন আপনাকে ছেলে, মেয়ে, বয়স, পেশা, অঞ্চল, ও দেশ বিশেষে মার্কেটিং করার সুযোগ করে দেয়। আপনি কোন প্রকারের কাস্টমারের কাছে আপনার পণ্যের বিজ্ঞপ্তি দেখাবেন, এসকল কিছুই স্যোশাল মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি ম্যানেজারে দেখতে পাবেন।
বর্তমানে স্যোশাল মিডিয়ায় ডিজিটাল মার্কেটিং করার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেননা, স্যোশাল মিডিয়ায় সময় কাটানোর একটা উপযুক্ত প্লাটফরম। তাই কোনো ডিজিটাল মার্কেটারস যখন কোনো পণ্যের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকেন, তখন বেশি সংখ্যক মানুষ দেখে এবং পণ্য বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাছাড়া আপনি যদি ব্যান্ডের জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চান, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফরম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া।
কন্টেন্ট মার্কেটিং – Content Marketing বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে
বিভিন্ন মার্কেট প্লেস যেমন – ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে কন্টেন্ট মার্কেটিং করা যায়। কন্টেন্ট বলতে আপনি কি বুঝেন? মূলত কন্টেন্ট বলতে টেক্সট, অডিও, ভিডিও, গ্রাফিক্সস ইত্যাদি নানা রকম হতে পারে। আপনি এসকল জিনিসের যেকোনো একটির উপরেকাজ করতে পারবেন।

কন্টেন্ট মার্কেটিং একটা অনেক বড় বিষয়। কেননা, কন্টেন্ট ছাড়া কোনো ওয়েবসাইট কিছুই না। যদি ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদিতে কন্টেন্ট না থাকতো, তাহলে সেখানে ভিজিটর আসবে না। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পণ্যের জন্য কন্টেন্ট লাগবেই। প্রোডাক্টের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, প্রোডাক্টের বিভিন্ন ছবি ও প্রোডাক্টের বিভিন্ন তথ্য ইত্যাদি কাজ করেও লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়।
বর্তমানে বিভিন্ন এআই এর কারণে কন্টেন্ট রাইটারদের মূল্য কমে গেলেও আপনি যদি এআইকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনার কাজের অভাব হবে না।
একজন ডিজিটাল মার্কেটারস হলে আপনাকে কন্টেন্ট তৈরি করতে জানতে হবেই। কন্টেন্ট হচ্ছে একটা ওয়েবসাইটের ভিত্তি। আপনার ওয়েবসাইটে কোনো কন্টেন্ট নেই, সেই ওয়েবসাইটের কোনো মূল্য নেই।
ইমেইল মার্কেটিং – Email Marketing
ইমেইল মার্কেটিং ( Email Marketing) হচ্ছে সবচেয়ে প্রভাবশালী ডিজিটাল মার্কেটিং প্রক্রিয়া। কেননা, ইমেইল মার্কেটিং করে সরাসরি নির্ধারিত ব্যক্তির কাছে পৌছে দেওয়া যায়। ইমেইল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং হচ্ছে ইমেইল কালেকশন।

বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটারস তাদের ইমেইল ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে, তাদের ফোনে এবং ইমেইল অ্যাড্রেসে বিভিন্ন প্রোডাক্টের বিভিন্ন ছাড়ের কথা বলে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
কোনো পণ্য বিক্রি হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। আপনি যখন ইমেইল সংগ্রহ করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের সার্চ ইঞ্জিনে, স্যোশাল মিডিয়ায় অথবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে মার্কেটিং করবেন, তখন পরবর্তীতে আপনাকে আর নতুন করে বিজ্ঞাপন দিতে হবে না। শুধু বিভিন্ন প্রকারের পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আপনি সরাসরি একই মেইল অনেক জনের কাছে পৌছে দিতে পারবেন।
ইমেইল মার্কেটিং করে আপনি খুব সহজেই একটি পণ্যের প্রচারনা সরাসরি উক্ত ব্যক্তির কাছে পৌছে দিতে পারবেন। তাই শুরুতে আপনার আপনাকে ইমেইল কালেশনের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে হতে পারে, পরবর্তীতে আর বিজ্ঞাপন না দিলেও হবে।
ভিডিও মার্কেটিং – Video Marketing
ভিডিও মার্কেটিং – Video Marketing হচ্ছে ভিডিও ব্যবহার করে প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ড প্রচার করা। বর্তমানে ভিডিও মার্কেটিং প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ড প্রচার করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম যেমন Facebook, YouTube, Instagram, LinkedIn এবং Twitter এ ভিডিও মার্কেটিং করে অনেক ডিজিটাল মার্কেটারস লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন।

ভিডিও মার্কেটিং করে একজন ডিজিটাল মার্কেটারসদের সাথে ইমোশনাল যোগাযোগ করা সম্ভব। কেননা, এর মাধ্যমে ভাব ও অনুভূতির সাথে যোগাযোগ করা সহজ হয়। তাছাড়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে সহজভাবে শেয়ার করা যায় – যা একটি ভালো দিক।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং – Influencer Marketing
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারের ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন পণ্য বা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার করাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বলে। ইনফ্লুয়েন্সারদের দ্বারা মার্কেটিং করার প্রক্রিয়াটি অনেক কাজে দেয়। কেননা, তাদের অনুসারীদের সাথে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক আগে থেকেই তৈরি থাকেন। যদি ইনফ্লুয়েন্সার কোনো পণ্য বা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারণা করে তাহলে সেই পণ্য অনেক বিক্রি হয়।

এই প্রক্রিয়ায় যদি কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং – Digital Marketing করে, সেক্ষেত্রে অনেক লাভবান হওয়া যায়। এর প্রধান উপকারিতা হচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পণ্য বা প্রোডাক্টের প্রচারণ করা যায়। অনেক সময়, বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের প্রোডাক্ট বা পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে বিভিন্ন ইনফ্লুয়েন্সারকে নিয়ে যোগাযোগ করে মার্কেটিং করে থাকে।
তাই সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন এবং তাদের সাথে সঠিক উপায়ে যোগাযোগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে প্রচারণা করতে চায়, তাহলে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ব্র্যান্ডের জন্য একজন অসাম্প্রদায়িক মৌলিক ভিত্তি গঠন করতে সহযোগিতা করতে পারে। বর্তমানে, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং – Influencer Marketing ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং – Affiliate Marketing
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং – Affiliate Marketing হচ্ছে এমন একটি অনলাইন ব্যবসা যার মাধ্যমে একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারস নির্ধারিত পণ্য বা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারনা করে বিক্রয় করার পর কমিশন পায়। তবে কমিশন কত পাবে এটা নির্ভর করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের উপর।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়াটি বিভিন্নভাবে সম্পন্ন হতে পারে। তবে প্রধান তিনটি ভাগ হচ্ছে – সরাসরি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেখানে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রদান করে থাকে, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যেখানে অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারস এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগসূত্র থাকে এবং অ্যাফিলিয়েট প্রচারক এরা সরাসরি বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সরাসরি প্রচার করে থাকে।
অ্যাফিলিয়েট প্রচারক মূলত তাদের ওয়েবসাইট, ব্লগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা বিভিন্ন অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারনা চালিয়ে থাকে। যখন উক্ত অ্যাফিলিয়েট প্রচারকের অনুসারীরা উক্ত প্রচারিত লিঙ্কে ক্লিক করে কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ক্রয় করে থাকে তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারস কমিশন পায়।
বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা অনেক। সামগ্রিকভাবে বলা যেতে পারে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি স্ট্র্যাটেজিক অভিজ্ঞতা যেখানে প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা মিলিয়ে উভয় পক্ষের জন্য একটি লাভদায়ক ব্যবসা।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ লোন | City Bank bKash Loan | কিভাবে নিবেন, কারা পাবেন, কত টাকা পাবেন
শেষকথা
ডিজিটাল মার্কেটিং – Digital Marketing সম্পর্কে আলোচনা করার পর আমরা বুঝলাম যে বাণিজ্যিক পণ্য বা সেবা বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রচার ও বিপণন করা। প্রযুক্তির আধুনিকায়ন ও ইন্টারনেটের অগ্রগতির ফলে ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দটির সাথে বহু মানুষ পরিচয় পাচ্ছে। যারা ব্যবসা করতে চান, তাদের দৈনন্দিন জীবনে ডিজিটাল মার্কেটিং অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেবার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে প্রিয় গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের মধ্যে ভালো পণ্য সরবরাহ করা। প্রযুক্তি অগ্রগতির ফলে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোম্পানিরা তাদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারছে। কেননা, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে প্রচারনা চালাতে হবেই। ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া এবং মতামত খুব সহজেই জানতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) এবং পেইড অনলাইন বিজ্ঞাপনের মতো বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে কোম্পানিরা তাদের পণ্য ও সেবার প্রচারনা করে থাকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে গ্রাহকের সাথে পণ্য বা সেবাদান কারীর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়া তোলা সহজ। Digital Marketing এর মাধ্যমে যেকোনো প্রতিষ্ঠান জন্য কম খরচে বেশি ফলাফল উপলব্ধি করতে পারেন। যদিও ডিজিটাল মার্কেটিং করার সময় কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তা সত্ত্বেও ডিজিটাল মার্কেটিং আধুনিক বাজার ও গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও তার উত্তর (FAQs):
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং হল একটি বিপণন কৌশল, যার মাধ্যমে ইন্টারনেট বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য বা সেবার প্রচার করা হয়। এতে সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, সার্চ ইঞ্জিন, এবং ওয়েবসাইটের মতো মাধ্যমগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি লক্ষ্যবস্তু গ্রাহকদের কাছে দ্রুত পৌঁছাতে সহায়ক। এছাড়া এটি কম খরচে এবং বিশ্বব্যাপী অডিয়েন্সের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব?
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে প্রথমে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, তারপর সেই অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। এটি করতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট তৈরি, এবং কনটেন্ট কৌশল তৈরির মাধ্যমে শুরু করতে পারেন।
SEO কি এবং এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
SEO (Search Engine Optimization) হল একটি প্রক্রিয়া যা আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিনে উচ্চতর স্থানে রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক আসে এবং বিক্রয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
কনটেন্ট মার্কেটিং কি?
কনটেন্ট মার্কেটিং হল এমন একটি কৌশল যেখানে তথ্যবহুল ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার করা হয়। এর মাধ্যমে ব্র্যান্ডের সাথে গ্রাহকদের আরও ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় এবং তারা ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে।
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কত সময় লাগবে?
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্র শেখার জন্য সাধারণত কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তবে এটি শেখার গতি এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে।
কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করা যায়?
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা যায় বিভিন্ন উপায়ে, যেমন ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, এবং ইউটিউব কনটেন্ট তৈরি।