বিকাশ লোন | City Bank bKash Loan | কিভাবে নিবেন, কারা পাবেন, কত টাকা পাবেন

আপনরা অনেকেই বিকাশ লোন নিতে চান। অনেকের জানার আগ্রহ আছে বিকাশ লোন কিভাবে পাবেন কত টাকা পাবেন। আমি আপনাদের এসকল প্রশ্নের উত্তর দিবো আজকের এই পোস্টে। 

আজকের আর্টিকেল এর বিষয় হলো বিকাশ লোন। আজলের আর্টিকেল বিকাশ লোন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বিকাশ লোন কি? বিকাশ লোন কিভাবে নিবেন? বিকাশ লোন পাওয়ার যোগ্যতা? কত টাকা লোন পাবেন ইত্যাদি বিষয়ে জানতে এই লেখাটি ভালো করে পড়ুন।

বিকাশ লোন কি  

বিকাশ একটি জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। বিকাশের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছে সিটি ব্যাংক। বাংলাদেশের শীর্ষ মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান বিকাশের গ্রাহকদের এই ঋণ দেবে সিটি ব্যাংক। বিকাশে লেনদেন প্রতিবেদন ও ব্যবহার ধরন দেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা Ai (এআই) ঠিক করবে গ্রাহক ঋণ নেওয়ার যোগ্য কিনা।

ঋণ পাওয়ার যোগ্য হলে তাৎক্ষনিকভাবে সিটি ব্যাংক ওই গ্রাহককে ঋণ প্রধান করে থাকে। এই ঋণ পেতে কোনো নথিপত্র বা ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ এর আবেদন করতে হবে।

বিকাশ লোন কারা পাবে

প্রথমেই বলে রাখি বিকাশ লোন সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। তাহলে কারা পাবে বিকাশ লোন চলুন জেনে নেই।বিকাশে লোন নেওয়া যতোটা সহজ মনে হয় আসলে এটা এতো সহজ নয়। যে কেউ চাইলেই বিকাশ লোন পাবেন না। আপনি যদি নতুন বিকাশ ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন আর বিকাশে যদি আপনি খুব একটা বেশি লেনদেন না করে থাকেন, তাহলে আপনার লোন পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।

কারণ, আপনার বিকাশ একাউন্টে লেনদেনের পরিমাণের তথ্য দেখে বোঝা যাবে আপনি আসলে পরে সেই লোন আবার ফেরত দিতে পারবেন কিনা। আপনার যেসব তথ্য বিকাশ ও সিটি ব্যাংকের কাছে থাকবে, সেসব তথ্যের উপর ভিত্তি করে তারা সিদ্ধান্ত নেবে যে আপনি বিকাশ লোন পাবেন কি না। কিংবা পেলেও ঠিক কত টাকা লোন পাবেন। 

বিকাশ থেকে কতো টাকা লোন নিতে পারবেন 

একজন বিকাশ গ্রাহকের একাউন্ট স্ট্যাটাস ও একাউন্ট ব্যবহারের ধরন বিবেচনা করে তাকে লোন সেবাটি দেয়া হয়ে থাকে। একজন বিকাশ কাস্টমার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিজিটাল লোন পেতে পারেন। গ্রাহকের বিকাশ একাউন্টে এই লোনের টাকা জমা হবে এবং বিকাশ একাউন্ট থেকে এই লোনের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। একজন গ্রাহক ৩ মাসের ভিতরে একবার এই লোন নিতে পারবেন।

বিকাশ লোন পাওয়ার যোগ্যতা 

বিকাশ থেকে লোন নিতে হলে আপনার নিচে দেওয়া যোগ্যতা গুলো থাকতে হবে। 

  1. নিবন্ধিত ব্যবসা ও স্বাক্ষরিত পেশা: আপনাকে নিবন্ধন একটি ব্যবসা বা পেশা দেখাতে হবে। 
  2. বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার: আপনাকে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। 
  3. ভূমিকা অনুযায়ী প্রমাণপত্র।
  4. আর্থিক যোগ্যতা: আপনাকে আর্থিক যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে লোন নিতে হলে।
  5. বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি (e-KYC) সম্পন্ন বিকাশ একাউন্ট থাকতে হবে।

বিকাশ লোন নিতে বেশি কিছুর প্রয়োজন হয়না। খুব সহজে আপনি ঘরে বসে বিকাশ লোন গ্রহন করতে পারবেন।

বিকাশ লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৫

বিকাশ লোন নেওয়ার জন্য আপনার একটি বিকাশ একাউন্ট থাকতে হবে। যদি বিকাশ একাউন্ট না থাকে তাহলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম এই পোস্ট টি পড়ে আসুন।

বিকাশ লোন পেতে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন। আপনার বিকাশ একাউন্টটি লগইন করুন। হোমপেজে যান এবং লোন অপশনটি নির্বাচন করুন। 

  • তথ্য শেয়ারের অনুমতি প্রদান করে পরবর্তী ধাপে যান।
  • একটি লোনের পরিমাণ নির্বাচন করুন যতো টাকা আপনাকে দেখায় এর ভিতর।
  • এখন উক্ত লোনের পরিমান ও কিস্তির মেয়াদ নির্বাচন করুন।
  • সিটি ব্যাংক থেকে আপনি কত টাকা লোন পাবেন ও কত টাকা পরিশোধ করতে হবে তা দেখে নিন, এগিয়ে যান বাটনে ক্লিক করুন
  • এবার আপনার সামনে কিছু কন্ডিশন দেখাবে রাজি থাকলে সম্মতি দিন লেখায় ক্লিক দিয়ে সামনে এগিয়ে যান।
  • এবার বিকাশ এর পিন নাম্বার দিন। 
  • এবার কিছু সময় ট্যাপ করে ধরে রাখলেই চলে আসবে সিটি ব্যংক লোন আপনার বিকাশ একাউণ্টে। 

 উপরে আলোচনা থেকে আমরা জানলাম কিভাবে সিটি ব্যাংক লোন বিকাশে গ্রহন করতে পারবো।

বিকাশ লোন পাওয়ার ট্রিক্স

বিকাশ লোন সিটি ব্যাংক দিয়ে থাকে। যেহেতু এই লোন সিস্টেমটি অটোম্যাটিক বা এ আই নির্ধারন করে দেয় তাই আপনি বিকাশ লোন পাওয়ার যোগ্য হতে হলে যে কাজগুলো করবেন তা নিচে দেওয়া হল।

  • বিকাশ একাউণ্ট তথ্য আপডেট না থাকলে আপডেট করুন।
  • নমিনির তথ্য যোগ করুন।
  • একাউন্টে সবসময় ব্যলেন্স রাখুন।
  • বেশি বেশি পেমেন্ট করুন।
  • ব্যাংক থেকে এড মানি এবং সেন্ড মানি করুন।

উপরের বিষয়গুলো ফলো করলে আশাকরি আপনি বিকাশ লোন পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন।

বিকাশ লোন পরিশোধ এর নিয়ম

আপনি বিকাশ লোন নেওয়ার পর একই পরিমাণ অর্থ পরবর্তী তিন মাসে তিনটি কিস্তিতে লোন গ্রাহকের বিকাশ একাউন্ট থেকে নির্ধারিত তারিখে সংক্রিয়ভাবে পরিশোধ  হয়ে যাবে। লোন পরিশোধের তারিখের আগে গ্রাহক এসএমএস ও অ্যাপের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন। গ্রাহক নির্দিষ্ট তারিখে লোন পরিশোধ করেছেন কিনা সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে  এবং পরবর্তী লোনের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হবে। 

বিকাশ লোন এ সুদের হার কতো 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী বা বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো ব্যাংকের লোনের সুদের হার ৯% হয়ে থাকে। সিটিব্যাংক বিকাশ লোনের সুদের  হার ও ৯%। 

সিটি ব্যাংক এর বিকাশ লোন নেওয়ার সুবিধা এবং অসুবিধা

বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার যেমন কিছু সুবিধা রয়েছে তেমনি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। বিকাশ লোনের সুবিধা অসুবিধাগুলো নিম্মে আলোচনা করা হল।

সুবিধা:

  • সহজ আবেদন: বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে লোনের জন্য আবেদন করা খুবই সহজ এবং সরাসরি অনলাইনে বিকাশ আপ্যের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
  • দ্রুত অনুমোদন: লোন অ্যাপ্লিকেশন প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পূর্ণ করে এবং অনুমোদন করে। এটি আপনার সময় বাচাবে।
  • প্রাথমিক কমিশন: বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে লোন নেওয়ার সময় আপনাকে কমিশন প্রদান করতে হয় না, যা আরও উপকারী হতে পারে।

অসুবিধাগুলি:

  • সীমিত লোন পরিমাণ: বিকাশে লোন সীমার মধ্যে আপনি একবারে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এর থেকে বেশি পরিমান লোন নিতে পারবেন না।
  • লোন আবেদনের অনুমোদনের অপেক্ষা: লোন আবেদনের জন্য আপনি যোগ্য হতে সময় লাগতে পারে বা সবাই লোন নাও পেতে পারেন। লোন নেওয়ার জন্য যারা যোগ্য কেবল মাত্র তারাই লোন নিতে পারবেন। 

বিকাশ লোনের পরিমান, মেয়াদ, সুদের হার

লোনের পরিমাণ৫০০ থেকে ২০,০০০ টাকা
ঋণের মেয়াদ৩ মাস
সুদের হার৯% বাৎসরিক
সুদ গণনাদৈনিক
লোন প্রসেসিং ফি০.৫৭৫% (০.৫% + ভ্যাট)
লোন পরিশোধে বিলম্ব ফি ২% বাৎসরিক

আরও পড়ুন: ব্যাংক কি, ব্যাংক কাকে বলে | ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য, ব্যাংকের কার্যাবলী

শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানলাম বিকাশ থেকে কিভাবে লোন নিতে হয়। বিকাশ বা সিটি ব্যাংক এর লোনের সুদের হার কতো। আর তা কিভাবে পরিশোধ করবো। আশা করি আজকের আর্টিকেল পড়ার পর বিকাশ লোন সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। 

সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs):

বিকাশ লোন কী?

বিকাশ লোন হলো সিটি ব্যাংক এবং বিকাশের একটি যৌথ উদ্যোগ, যেখানে বিকাশ ব্যবহারকারীরা সরাসরি তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিতে পারেন। এটি সহজ এবং দ্রুত ঋণ গ্রহণের একটি পদ্ধতি, যা মূলত বিকাশের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

কে বিকাশ লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন?

যেকোনো বিকাশ ব্যবহারকারী, যারা সিটি ব্যাংকের নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করেন, তারা এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত নিয়মিত বিকাশ ব্যবহারকারীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত।

বিকাশ লোনের পরিমাণ কত?

লোনের পরিমাণ ব্যবহারকারীর বিকাশ ট্রানজেকশনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। সাধারণত ৫০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়।

কীভাবে বিকাশ লোনের জন্য আবেদন করতে হয়?

বিকাশ অ্যাপের “লোন” সেকশন থেকে সরাসরি লোনের জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন জমা দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের পর লোন অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

কতবার লোন নেওয়া যাবে?

প্রথম লোন সফলভাবে পরিশোধের পর, পুনরায় লোনের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। ব্যবহারকারীর ক্রেডিট রেকর্ড এবং লোনের ইতিহাস অনুযায়ী লোনের সুযোগ দেওয়া হয়।

বিকাশ লোন নেওয়ার জন্য কি ক্রেডিট স্কোর প্রয়োজন?

না, বিকাশ লোনের জন্য সাধারণত ক্রেডিট স্কোর প্রয়োজন হয় না, তবে ব্যবহারকারীর বিকাশ অ্যাকাউন্টের লেনদেনের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে লোনের যোগ্যতা নির্ধারিত হয়।

Leave a Comment